||১||
“বডি তো চার ঘন্টার আগে ছাড়বে না | আমরা এক্ষুনি বেরোচ্ছি কেমন? ও.কে, রাখলাম তাহলে |”- ফোনটা নামিয়ে রাখলেন ভবতোষ বাবু |
ভবতোষ বাবুরা দুই ভাই, এক বোন | বড় বোন সুমিত্রা দেবীর স্বামী মারা গেছেন এই কিছু ক্ষণ আগে, সেই নিয়েই ফোনটা | স্ত্রী, পুত্র, পুত্রবধূ নিয়ে ভবতোষ বাবু কলকাতায় থাকেন | এই বছরই রিটায়ার করেছেন | স্ত্রী গায়ত্রী দেবী গৃহবধূ | পুত্র সায়ন ও পুত্রবধূ প্রিয়াঙ্কা ব্যানার্জী একই অফিসে চাকরি করে |
ভবতোষ বাবু যত শীঘ্র সম্ভব সুমিত্রা দেবীর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলেন | সুমিত্রা দেবীর বাড়ি হুগলি চন্দননগর, অনেকটাই রাস্তা | তাই তাড়াহুড়ো করেই বেরোতে হলো | বাড়ি ফিরতে স্বাভাবিক ভাবেই অনেক রাত হলো |
||২||
পরদিন সকালে, চা খেতে খেতে, ভবতোষবাবু বললেন,” দিদিকে দেখার তো কেউ নেই | যা অবস্থা, এই কদিন ওখানে আমাদের কারও একটা থাকা উচিত | শ্বশুরবাড়ির লোক আছে, তাও আমাদেরও যাওয়াটা দরকার, দিদির যা মনের অবস্থা | কাজ মিটলে তারপর কি হবে, ব্যবস্থা করা যাবে খন |”
গায়ত্রী দেবী ভ্রু কুঁচকে খানিক বিরক্তি প্রকাশ করে বললেন,” অত লোক আছে তো, আমরা থেকে কি করব বলো ?”,” আর এতটা রাস্তা যাতায়াত কি চাট্টি খানি কথা, আর ব্যবস্থা মানে কি? আমি কোন ঝামেলায় নেই ব্যস |” এই বলে গায়ত্রী দেবী চা-এর কাপ নিয়ে উঠে গেলেন |
ভবতোষ বাবু আর কোন কথা বাড়ালেন না | কথার পিঠে কথা বাড়ালেই অশান্তি | কিন্তু ভাবতেও তো হবে |
প্রিয়াঙ্কা অফিসে যাবার জন্য রেডি হচ্ছিল | এই বাসট্রাম-এর ভিড়ে লেগিংস, জিন্স এগুলোই কমফরটেবল | তাই ও এগুলোই পছন্দ করে | কিন্তু গায়ত্রী দেবী পুত্রবধূর এ হেন পোশাক নির্বাচন দুচোখে দেখতে পারেন না |
“বৌমা বিয়ের এতগুলো শাড়ি আলমারিতে পচছে, না পরলে বিক্রি করে দাও |”- ঠেস দিয়ে কথাটা ছুড়লেন গায়ত্রী দেবী |
প্রিয়াঙ্কা বরাবরই স্পষ্টবাদী | স্পষ্ট কথা মুখের উপর বলার বদঅভ্যাসের জন্য অনেকেরই চোখের বালি | “কেন মা? বিক্রি করব কেন? যদি দিতেই হয়, দান করব |”
“দেখতে পেয়েছো তোমার বৌমার কথাবার্তা, সব সময় মুখে মুখে তর্ক |” কর্তাকে শুনিয়ে বললেন গায়ত্রী দেবী | ভবতোষ বাবু শুনেও না শোনার ভান করে খবরের কাগজে মন দিলেন | সায়ন এসব ফালতু ঝামেলায় কখনই জড়ায় না | ওরা রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়লো ঝটপট |
প্রিয়াঙ্কা আজ অফিস থেকে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে চন্দননগর গেছল পিসির কাছে, বাড়িতে জানায়নি | ফিরতে দেরি হলে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্নের মুখে পড়তে হতো তাই ঢুকেই প্রিয়াঙ্কা ঢপটা দিয়ে দিল, “আজকে অফিসে প্রচুর কাজের চাপ গেল, তারপর যা জ্যাম, তাই এত রাত হলো |”
গায়ত্রী দেবী -” তো বাবু এত তাড়াতাড়ি কিভাবে চলে এল শুনি? একই জায়গা থেকে বেরিয়ে |”
প্রিয়াঙ্কা-” মা, এক অফিসে কাজ করি, ডিপার্টমেন্ট তো এক নয় |”
গায়ত্রী দেবী মুখ ঘুরিয়ে চলে গেলেন |
সায়ন চোখ মেরে জিজ্ঞেস করলো, “আমার জান আজ কোথায় গেছল? আমায় বলা যাবে কি?” প্রিয়াঙ্কা চোখের ইশারায় বোঝাল, পরে বলবে |
||৩||
সায়ন প্রিয়াঙ্কাকে ভালোই বেসেছিল ওর এই অন্যরকম হওয়ার জন্যই | সবার থেকে যেন একদম আলাদা | প্রিয়াঙ্কার কথাবার্তা কাজকর্ম সবই অন্যরকম, খুব ভালো লেগে গেছিল সায়নের | মুখে মিষ্টি ভাষা হয়তো নেই, কিন্তু মনে যে মিষ্টত্ব আছে তা সবকিছুকে ছাপিয়ে যায় | মানুষের জন্য কিছু করতে পারলে প্রিয়াঙ্কা যেন আর কিছুই চায় না |
বাইরে থেকে যতটা শক্ত, ভিতর থেকে ততটাই নরম | মিথ্যা ভালো লাগানোর, লোকদেখানোর কোন বাড়বাড়ন্ত না | যতটুকু করা পুরোটাই আসল, আন্তরিক | তাতে কোন খাদ নেই | মুখের ভাষা শুনে বোঝাই যায় না পিছনের মানুষটা সম্পূর্ণ আলাদা | আর সায়ন এই প্রিয়াঙ্কার জন্যই পাগল | তাই যখন শুনল প্রিয়াঙ্কা পিসির বাড়ি গেছল তখন নিজের পছন্দের উপর গর্বটা যেন আরেকটু বেড়ে গেল |
||৪||
সুমিত্রা দেবী নিঃসন্তান | সুমিত্রা দেবীর স্বামী মৃত্যুর আগেই উইল করে অর্ধেকের বেশি সম্পত্তি কোন অনাথ আশ্রমকে দিয়ে গেছেন, আর বাকিটা সুমিত্রা দেবীর নামে আছে | সুমিত্রা দেবীও স্বামীর এই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানান | নিজের নাম থাকা সম্পত্তি টুকুর অর্ধেক মালিকানা দুই ভাই-এর ছেলেদের নামে আর বাকি অর্ধেক একটি বৃদ্ধাশ্রমকে দিয়ে যাবেন বলে মনস্থির করেন |
কিন্তু এরপর সমস্যা হলো, সুমিত্রা দেবীর এখন যা শারীরিক আর মানসিক অবস্থা, ওনার অর্থের প্রাচুর্যের থেকেও কাছের মানুষদের যত্ন চাই | ভবতোষ বাবুদের ছোট ভাই বিদেশে থাকে সপরিবারে | তাই ভবতোষ বাবু স্থির করেন, সুমিত্রাদেবীকে এবাড়িতেই এনে রাখবেন, আর তখনই সমস্যাটা বাধে |
“আমি পারব না এই বয়সে তোমার বোনের সেবা করতে |”- ঝঁঝিয়ে উঠলেন গায়ত্রী দেবী |
“আরে সেবা করার কথা আসছে কথা থেকে? দিদি তো আর শয্যাশায়ী নয়, এই বয়সে এই অবস্থায় একজনকে একা ছেড়ে দেব? আমরা ছাড়া দিদির কে আর আছে নিজের?”-ভবতোষ বাবু স্ত্রীকে বোঝানোর চেষ্টা করেন |
“তো আমরাই যখন সব, তখন সম্পত্তির ভাগের বেলায় সেটা মনে পড়ল না কেন বলতে পারো? এত সম্পত্তির সবই তো দান করে দিয়েছেন | তাহলে, বৃদ্ধাশ্রমে যখন দান করেছে, সেখানেই থাকুন |, কুড়িয়ে বাড়িয়ে একটু আধটু আমাদের ছেলেদের দিতে এসছেন | এরকম দেয়ার দরকার কি? ছুঁচো মেরে হাত গন্ধ |”- গায়েত্রী দেবী |
প্রিয়াঙ্কা মাঝখানে বলে ওঠে, “তাহলে মানা করে দিন না, যে এই সম্পত্তি চাই না | ব্যস, আর ছুঁচো মেরে হাত গন্ধ হবে না |”
গায়েত্রী দেবী বলে ওঠেন, “তুমি সব ব্যাপারে কেন এত কথা বল বৌমা? তোমাকে কি কেউ জিজ্ঞাসা করেছে? সম্পত্তি নেয়া হবে কিনা সেই সিদ্ধান্ত আমি নেব, তুমি নয় | বাড়ির নতুন বৌ, নতুন বৌ-এর মতোই থাকো |
অগত্যা প্রিয়াঙ্কা উঠে চলে গেল | প্রিয়াঙ্কা ভাবতে বসলো, এভাবে হবে না, অন্য কোন ব্যবস্থা করতে হবে |
||৫||
(কিছুদিন পর… ব্রেকফাস্ট টেবিলে )
প্রিয়াঙ্কা- “মা, তোমাদের একটা জরুরি কথা বলার ছিল |” কাগজ সরিয়ে তাকালেন ভবতোষ বাবু, গায়ত্রী দেবীও জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালেন |
” আসলে আমরা একটা ফ্ল্যাট কিনছি ভবানীপুরে | আমাদের অফিস থেকেও কাছে হবে | লোন-এর ব্যাপারটাও মিটে গেছে, খুব তাড়াতাড়িই ফ্ল্যাটটা পেয়ে যাব আশা করছি |”- এই বলে প্রিয়াঙ্কা থামলো |
গায়ত্রী দেবী- ” আরে এত বড় বাড়ি থাকতে ফ্ল্যাট-এর কি দরকার? এত কিছু করার আগে একবারও অনুমতি নেবার প্রয়োজন বোধ করোনি? হ্যাঁ রে বাবু তুইই বা কি? নিজের মা বাবাকে একবার জিজ্ঞেস করবি না? আমি নিজের এতবড় বাড়ি ছেড়ে কোনোভাবেই ওখানে যাব না | ওসব ফ্ল্যাটের চিন্তা মাথা থেকে সরিয়ে ফেলো | আরে তুমিও কিছু বলো?
ভবতোষ বাবু-” হ্যাঁ, আমাদের একবার জিজ্ঞাসা তো করবি |”
প্রিয়াঙ্কা-” না, না, তোমরা ঠিক বুঝতে পারছ না | আমি আর সায়ন শুধু শিফ্ট হবো, তোমরা নয় | মানে আমরা ফ্ল্যাটে চলে যাবো | সায়ন তুমিও কিছু বলো |”
সায়ন বলল,”হ্যাঁ মা, আসলে অনেকটা ডিসটেন্স হয়ে যাচ্ছে আর প্রাইভেসী টাও একটা ইস্যু , তো…”
“থাক আর কিছু বোঝাতে হবে না | আমি জানতাম এরকমই হবে | এই মেয়েই আমার ছেলের মাথাটা খেয়েছে |”-গায়ত্রী দেবী |
“আহ, গায়ত্রী চুপ করো | এ কি ধরনের ভাষা, আর বৌমা, বাবু তোরা এত বড় একটা ডিসিশন নিয়ে নিলি? আমাদেরও তো বয়স হচ্ছে, আমাদের কে দেখবে বলতো?”- ভবতোষ বাবু |
সায়ন,”বাবা আমরা তো আসব | এরকম তো নয় যে দেখা হবে না, আর তোমরা তো এখন সুস্থই আছো | আমার মনে হয় না খুব অসুবিধে হবে বলে | আরে একই শহরে তো থাকব |”
গায়ত্রী দেবী -“যা বাবু যা, বৌয়ের আঁচল ধরে বসে থাক | তোকে আর এত সাফাই দিতে হবে না |”
প্রিয়াঙ্কা -“মা এভাবে কেন বলছেন?”
গায়ত্রী দেবী-“তুমি একদম চুপ করে থাকো, তোমার জন্যই আজ আমার সংসার ভাঙতে বসেছে |”
সায়ন-“মা, প্লিজ, তুমি কিন্তু ওভার রিএক্ট করছ | তোমরা যদি একা থাকতে না চাও চলো আমি বৃদ্ধাশ্রমের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি | তাহলে তো কোনো প্রবলেম হবে না আর তোমাদের একাও থাকতে হবে না |”
“হে ভগবান, এবারে এরা বৃদ্ধাশ্রমে পাঠাবার কথা বলছে? এ কোন ছেলেকে পেটে ধরেছিলাম? ছিঃ ছিঃ ছিঃ”, বলে গায়ত্রী দেবী কাঁদতে কাঁদতে উঠে চলে গেলেন |
||৬||
প্যাকিং শেষের পথে | গায়ত্রী দেবী মুখে কুলুপ এঁটেছেন, আর স্বামীকে শুধু একটা কথাই শোনাচ্ছেন,”এই বৌমা তো তোমার চোখের মনি ছিল, এখন দেখছো কেমন গিরগিটির মতন রং বদলালো? আমি প্রথম থেকেই জানতাম, এই মেয়ে এরকমই করবে |” ভবতোষ বাবু সম্মতি জানিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেললেন, কিছু বললেন না |
“মা আসব? সায়ন ঘরের বাইরে থেকে জিজ্ঞাসা করল | সায়নের হাতে একটা ফর্ম |
“এসো, বলো আর কি বলবে?”- গায়েত্রী দেবী |
সায়ন ঘরে ঢুকে বলল,” মা আমরা আর দিন তিনেকের মধ্যেই শিফ্ট করব | এই ফর্মটা রেখে গেলাম | যদি তোমরা একা থাকতে না চাও তো এটা ফিল-আপ করে দিও আজ | আমি সব কথা বলে রেখেছি, বৃদ্ধাশ্রমটা খুব ভালো |” ফর্ম টা রেখে সায়ন চলে গেল |
গায়ত্রী দেবী বিহ্বল দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন ছেলের দিকে, এ কাকে দেখছেন? এই কদিনে ছেলেটা এভাবে বদলে গেল আর মা হয়ে সেটা বুঝতে অবধি পারলেন না |
“কোন পাপের এই শাস্তি পাচ্ছি বলতে পারো?” স্বামীকে প্রশ্ন করলেন উনি |
ভবতোষ বাবু কিছু না বলে উঠে চলে গেলেন | গায়ত্রী দেবী ঘর অন্ধকার করে বসে রইলেন |
******************
“আমি ট্যাক্সি বলে দিয়েছি, কাল দুপুরের মধ্যেই চলে আসবে |”
“ঠিক আছে |”
সায়ন আর প্রিয়াঙ্কা কথা বলছে, গায়ত্রী দেবী শুনতে পেলেন | উনি নিজের ঘরের ব্যালকনিতে একা গিয়ে বসলেন | এমন সময় পিছনে প্রিয়াঙ্কার গলা-“মা?”
ইদানিং প্রিয়াঙ্কার সাথে স্বাভাবিক ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধই করে দিয়েছেন প্রায় গায়ত্রী দেবী |
ঝাঁঝিয়ে উত্তর দিলেন, “কি বলবে বলো?”
“মা খুব কষ্ট হচ্ছে?”-প্রিয়াঙ্কা |”
গায়েত্রী দেবী ভ্রু কুঁচকে তাকালেন এবার,”কিছু বলার থাকলে বলে বিদায় হও |
প্রিয়াঙ্কা এবার গায়ত্রী দেবীর পা-এর কাছে এসে বসে পড়ে বলল,”মা বিশ্বাস করো, তোমার মত আর একজনও কষ্ট পাচ্ছে |”
-“মানে?”
-“মানে পিসিমনি, পিসিমনিও তো একা, আর বয়সেও তো অনেক টা বড় | এই বয়সে উনিও তো অনেক কষ্ট পাচ্ছেন তাই না?”
গায়ত্রী দেবী অবাক চোখে তাকিয়ে রইলেন |
প্রিয়াঙ্কা বলে চলল,”মা আপনিও তো পিসিমনিকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠাবারই পরামর্শ দিয়েছিলেন | একবারও ভেবেছিলেন এই কথাটা শুনে ওনার কীরকম লাগবে? উনি সম্পত্তি দান করেছেন বলে আপনার রাগ তাই তো? আচ্ছা একটা কথা বলুন তো, কাউকে ভালবাসতে গেলে সে কি দিল, কতটা দিল, সে সব কিছু মেপে কি ভালবাসতে হয়? উনি যতটা যা দেবার দিয়েছেন | তার মানে কি এই উনি কম দিয়েছেন বলে, ওনাকে ভালবাসা, সম্মান করা বন্ধ করে দেব? আচ্ছা আমরা ওনাকে কি দিয়েছি? সব সময় নেওয়া, কি পেলাম, এসব হিসেবে কেন করছি মা? কি দিলাম সে হিসেবটা তো কখনো করি না |”
পিছন থেকে সায়ন বলে উঠলো,”হ্যাঁ মা, পিসি এই বয়সে একা কিভাবে থাকবে সেটা কেন ভাবলে না, পিসি কি কিছু কম দিয়েছেন আমাদের? আর আজ তাকে দেখার সময় মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে হিসেব করতে বসব যে কি পেলাম?”
ভবতোষ বাবুও সঙ্গে ছিলেন, বললেন,”হ্যাঁ গায়ত্রী তোমায় যখন বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানোর কথা উঠলো তখন তুমি এই বাচ্চা মেয়েটাকে কালপ্রিট করলে | একবারও ভাবলে না যে এই একই ভুলতো তুমিও করতে যাচ্ছিলে?”
প্রিয়াঙ্কা গায়ত্রী দেবীর হাত টা ধরে বলল,”মা আমাদের সবারই কিছু দায়িত্ব আছে | আর সেটা কতটুকু পেলাম সেই হিসেব করে পালন করা যায় না | আমরা তো আমাদের মা বাবার থেকেই শিখব |”
গায়ত্রী দেবী চুপ করে রইলেন কিছুক্ষন,তারপর বললেন, “আমি ভুল করেছি | আমি আজই দিদিকে আনতে যাবো |”
প্রিয়াঙ্কা হাসি মুখে বলল,”আমরাও তোমায় ছেড়ে কোথাও যাচ্ছি না | কদিনের জন্য পুরী যাচ্ছি |”
“মানে? তোমরা ফ্ল্যাটে যাচ্ছ না?” গায়ত্রী দেবী অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন |
“ভবতোষ বাবু বললেন,”বিয়ের পর থেকে তো কোথাও-ই যাওয়া হয়নি ওদের, ঘুরে আসুক কদিন | আমরাও দিদিকে নিয়ে চলে আসি সে কদিনের মধ্যে | আমিই ওদের ঘুরে আসতে বললাম |”
গায়ত্রী দেবী-“মানে? তুমি সব জানতে?”
সবাই হেসে সমস্বরে বলে উঠল,”আমরা সবাই জানতাম |”
*****************
ট্যাক্সি ছেড়ে দিলো, প্রিয়াঙ্কার হাত টা ধরে সায়ন বলল,”তুমি একদম অন্যরকম, আমি জানতাম তুমি পারবে |” প্রিয়াঙ্কা স্বামীর হাত শক্ত করে ধরল |”
এদিকে ভবতোষ বাবু চন্দননগর পাড়ি দিলেন, যেতে যেতে বললেন,”আমি গর্বিত প্রিয়াঙ্কা আমাদের বাড়ির বউ |”
গায়ত্রী দেবীও মাথা নেড়ে অবশেষে সম্মতি জানালেন |