বিশ্বাসঘাতক

অভীক আর শিঞ্জিনী, এখন এই দুটি নাম একসাথেই উচ্চারিত হয় | সামনের ফাল্গুনেই ওদের বিয়ে | স্বপ্নের বিয়ে যাকে বলে | দুজন দুজনকে ভালবাসে, মা বাবার সম্মতিতে খুব তাড়াতাড়ি এক হতে চলেছে চার হাত | এর থেকে ভাল আর কীই বা হতে পারে?

শিঞ্জিনীর দু’বোন | অভীক আর শিঞ্জিনীর সম্পর্কটা বহুদিনের, ছ’বছর তো হবেই | সেই কলেজ থেকে ওরা একসাথে | বিয়ের প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে | কার্ড বিলোনো, তত্ত্ব-এর কেনা কাটি, ক্যাটারিং, মণ্ডপ সব মিলিয়ে যেন দম ফেলার ফুরসৎ নেই সেন আর চৌধুরী বাড়ির |

শিঞ্জিনীর মনে হচ্ছে পুরো জার্নিটা স্বপ্নের মতো | অভীকের অফিসের জন্যই এতদিন ডেট আর ঠিকই হচ্ছিল না | At last ঠিক হয়েছে |

শিঞ্জিনী আজ double খুশি | এখুনি টেস্ট করল pregnancy kit-এ, result positive | উফফ, আর তর সইছে না | এই খবর ta অভিককে দিতেই হবে, যে অভীক বর-এর সাথে সাথে বাবাও হবে |

তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে বেরলো শিঞ্জিনী, অভীক-এর বাড়ির উদ্দেশ্যে | অভীকের বাড়ি south আর ওর পুরো north | অভীকের বাড়ির অনেক দিনের পুরনো চাকর বংশীদা দরজা খুলে দিল |

“কি গো বংশীদা, কেউ নেই বাড়ি? -শিঞ্জিনী |

“না সবাই তোমার বিয়ের কেনাকাটা করতেই বেরিয়েছে | অভীক দাদা উপরে আছে | অভীক দাদার বন্ধু এসেছে একজন | তুমি যাও ওপরে বৌদিমনি | আমি তোমার পছন্দের লুচি আলুর দম বানিয়ে আনছি | বংশীদা শিঞ্জিনীকে অনেক দিন ধরেই চেনে, ও তাই ওকে বৌদিই বলে |

শিঞ্জিনী উপরে চলে গেল | অভীকের ঘরের দরজাটা বন্ধ, ভেতর থেকে মেয়ের গলা ভেসে আসছে | ‘কে রে বাবা?’, শিঞ্জিনী দরজাটা খুলেই, ঘর থেকে ছিটকে বেরিয়ে এল | অভীক খাটে শুয়ে, ওর উপর হামলে পড়েছে একটি মেয়ে, সে আর কেউ না, অভীকের প্রাক্তন প্রেমিকা, নেহা | দু’জনের পোশাকই অগোছালো | শিঞ্জিনী নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না | লজ্জায়, ঘৃনায় মাটিতে মিশে যাচ্ছে শিঞ্জিনী | ঘটনার আকস্মিকতায় কারও মুখেই কথা নেই | সম্বিত ফিরতেই নেহা কে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে, অভিক উঠে পড়ে | শিঞ্জিনী কাঁদতে কাঁদতে নীচে চলে আসে | বংশীদা তো হতবাক,”কি হলো? বৌদিমনি, আবার ঝগড়া করেছো বুঝি?”

অভিক বার বার ডাকা সত্ত্বেও শিঞ্জিনী আর দাঁড়ায়নি | কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে গিয়ে একটা ট্যাক্সি ধরে ও বাড়ির দিকে রওনা হয় | লাভ নেই জেনেও অভিক অসহায়-এর মতো রাস্তায় চিৎকার করে ডাকতে থাকে শিঞ্জিনীকে | 

শিঞ্জিনী বিয়ে ভেঙে দেয় | নিজের চোখকে তো অবিশ্বাস করা যায় না, তাই আর clarification-এর কোনো দরকার নেই | শিঞ্জিনীর ফোন সুইচ অফ | বিয়ে ভাঙার কোন কারণই কাউকে বলল না | শুধু বলল,”অভীক পুরোটা জানে |”

অভীক বার বার শিঞ্জিনীর সাথে দেখা করতে চেয়েও বিফল | শিঞ্জিনী একটা নোংরা, বিশ্বাস ঘাতকের সাথে আর কোন কথাই বলতে চায় না | নিজেকে বন্দি করে ফেলেছে ও | শিঞ্জিনীর অফিসে ওকে বদলির জন্য চাপ দিচ্ছিলোই, ও-ই নানাভাবে ব্যাপারটাকে delay করছিল | শিঞ্জিনী ভাবল আজই boss-কে জানিয়ে দেবে, ওর বদলিটা যেন sir করে দেন | আর এখানে থেকে লাভই বা কী?

এদিকে শিঞ্জিনী আর অভীকের মা বাবা পুরোপুরি clueless | কিছু মারাত্মক যে ঘটেছে, তা বোঝা যাচ্ছে | কিন্তু কী এমন হলো, আজ সম্পর্কের এত বছর পর |

শিঞ্জিনীর মা ঘরে ঢুকলো | দেখতে পেয়েই শিঞ্জিনী চোখ মুছে নিল,”বল মা কি বলবে?”

“মা তোদের মধ্যে কি হয়েছে, আমায়ও বলবি না?”- শিঞ্জিনীর মা |

“না মা বলতে পারব না | তাই বার বার জিজ্ঞাসাও কোরো না | তোমার ছোট মেয়ে কোন বিশ্বাসঘাতককে বিয়ে করতে পারবে না | ব্যাস, এর বেশি আর কিছু জানতে চেও না | আর আমার বদলির অর্ডার এসে গেছে মা, আমি পরশুই কেরালা রওনা হবো | please, এটা বাবা ছাড়া আর কাউকে জানিয়ো না, আমার দিব্যি রইলো |

“এসব কি বলছিস তুই? আমাদের কথা, আমাদের সম্মানের কথাটা তো ভাব একবার |”-শিঞ্জিনীর মা |

“সমাজের কথা ভাবতে গিয়ে নিজের অসম্মান করতে পারব না মা |”- শিঞ্জিনী | ওর রুদ্রমূর্তি দেখে কিছু বলার ছিল না আর |.

*******************

………..শিঞ্জিনী সত্যিই চলে গেল | কারওর কোন কথাই আটকাতে পারেনি ওকে | বড্ড তাড়াতাড়িই সব কিছু হয়ে গেল… একা পুরোটা সামলানো খুব কষ্টকর ছিল | কিন্তু শিঞ্জিনী একাই চলতে চেয়েছিল | এর মধ্যে ও সমস্ত contact details-ও পাল্টে ফেলেছে | মা, বাবা, দিদি ছাড়া আর কারও সাথেই যোগাযোগ রাখেনি | আর কোথাও শিঞ্জিনীর মা বাবারও এটাই মনে হয়েছিল যে শিঞ্জিনীর এত বড় সিদ্ধান্তের পিছনে নিশ্চয় কোন যুক্তিযুক্ত কারণই আছে যা ওর পক্ষে মা বাবাকে বলা সম্ভব হয়নি | 

পাঁচ বছর কেটে গেছে ঘটনার | শিঞ্জিনী এখানেই নিজের একটা ছোট সংসার গড়ে নিয়েছে, শিঞ্জিনী আর আর্শির | শুরুর দিনগুলি সহজ ছিল না, শিঞ্জিনী দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করে গেছে, করছে এখনও | আর্শি এখনও খুব ছোট |

লজ্জায়, ঘেন্নায় শিঞ্জিনী ভেবেছিল অভিকের সন্তানকে নষ্ট করে ফেলবে, কিন্তু এত বড় পাপ ও করতে পারেনি | এখন আর্শিই ওর জীবন | আর্শিকে ঘিরেই ওর সব কিছু | আর্শিকে একবার সারাদিনে মামমাম এর হাতে খেতেই হবে | আর্শির সব বকবক শোনা, স্কুলের গল্প, ওকে সামলানো, ঘুরতে নিয়ে যাওয়া, পড়ানো এসব কিছুতেই দিব্যি মেতে আছে শিঞ্জিনী | এখন আর তেমন কষ্ট হয় না |

মা বাবার সাথে সম্পর্কের সমীকরণটা আর্শির ব্যাপারটা জানার পর থেকে নড়বড়ে হয়ে গেছে | একমাত্র শিঞ্জিনীর দিদিই পুরো ব্যাপারটায় সাপোর্ট করেছিল |

অভিক আর শিঞ্জিনী ঠিক করে রেখেছিলো মেয়ে হলে নাম হবে আর্শি | শিঞ্জিনী বলত, “যদি ছেলে হয়?” অভীক বলত,”না আমার মেয়েই হবে | “আর্শি বাবার মতোই দেখতে হয়েছে | আর্শির দিকে তাকিয়ে অতীতের দিনে ফিরে গিয়েছিল শিঞ্জিনী | আর্শির চিলচিত্কারে হুঁশ ফিরল | আজ বেড়াতে নিয়ে যেতে হবে ওকে, সামনেই একটা নতুন play ground খুলেছে |

এখানে কাজের লোক পাওয়া খুব মুশকিল | একজন আয়া গোছের আর্শি হওয়ার সময় থেকেই ছিল | বয়স হওয়ায় আয়ার কাজ ছেড়ে দিয়েছেন কিন্তু শিঞ্জিনী তাকে রাত দিনের জন্য রেখে নিয়েছে | basic হিন্দিটা বোঝেন, তাই খুব অসুবিধা হয় না | শশীকলা নাম | শশীদি কে বলে আর্শিকে নিয়ে শিঞ্জিনী বেরল |

রাস্তায় বেরোতেই আর্শির বায়না “চিপস খাবো “| সামনের একটা departmental store-এ ঢুকল ওরা | চিপস-এর rackটা খুঁজতে খুঁজতেই সামনে  চোখ পড়তেই, ধক করে উঠলো বুকটা, দেখল অভিককে, হ্যাঁ অভিক, যার মুখ যাতে দেখতে না হয়, সেই প্রার্থনাই করেছিল শিঞ্জিনী | আজ সেই অভীক ওর সামনে দাঁড়িয়ে, দু’জনই দুজনের দিকে তাকিয়ে |

অভীকই এগিয়ে এল,”কেমন আছ শিঞ্জিনী?”

শিঞ্জিনী এতটুকু ইতস্তত বোধ না করে চোখে চোখ রেখে উত্তর দিল,”খুব ভাল | তুমি?”

অভিক-“আমি just কদিন হলো অফিসের কাজে এখানে বদলি হয়েছি, তাই কেনাকাটা করছিলাম | তুমি?”

হঠাৎই আর্শির চিৎকারে চমকে উঠলো শিঞ্জিনী | “মামমা ও মামমা, তল না তল না …”, আধো আধো গলায় তাগাদা লাগলো ছোট্ট আর্শি |

অভিক-“তোমার মেয়ে?”

শিঞ্জিনী-“হ্যাঁ, obviously |”

অভিক-“বিয়ে কবে করলে?”

শিঞ্জিনী-“অনেকদিন, তুমি?”

অভিকের মুখটা আমূল বদলে গেল হঠাৎই, যেটা শিঞ্জিনীর নজর এড়ালো না | অভীক নীচু হয়ে আর্শির গালে আদর করে বলল,”কি নাম তোমার সোনা”

আর্শি বলার আগেই শিঞ্জিনী বলে উঠল,”তিতলি, ওর নাম তিতলি |”

আর্শি অবাক হয়ে মার দিকে চেয়ে রইলো, মা মিথ্যে বলছে কেন ছোট আর্শি বুঝলো না |

অভিক আবার জিজ্ঞেস করলো, “কোন ক্লাসে পড় তুমি?”

এবারও শিঞ্জিনী তাড়াহুড়ো করে উত্তর দিল, “ও এখনও স্কুলে ভর্তি হয়নি | তোমার কি খবর বল | কবে বিয়ে করলে?”

অভিক বলল,”আমি এই recent বিয়ে করেছি |”

“আমাদের দেরি হয়ে যাচ্ছে, আসছি |” বলেই শিঞ্জিনী তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে গেল |

******************

অভীক শিঞ্জিনীকে একবার যখন পেয়েছে, তখন এই সুযোগটা আর ছাড়বে না, যেভাবেই হোক শিঞ্জিনীর সাথে কথা বলবে | ও যে বিশ্বাসঘাতক নয়, শিঞ্জিনী যা দেখেছে তা ঠিক ছিল না, ভুল বুঝেছে, এই সব কিছু শিঞ্জিনীকে জানাবে | কিন্তু তার আগে তাকে জানতে হবে শিঞ্জিনীর স্বামী কে ? শিঞ্জিনী কোথায় থাকে? সব | অফিসে বসে বসে এগুলোই ভাবছিল অভীক |

 

ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয় | অভীকও রাস্তা পেয়ে গেল, ওর অফিসের পথে একটা বাচ্চাদের স্কুল পড়ে | সম্ভবত ছুটি হচ্ছিল তখন, মর্নিং স্কুল, অভীক হঠাৎ দেখতে পায় তিতলিকে মানে আর্শিকে | দেখে এগিয়ে আসে, আর্শি একদিন দেখেই অভীককে মনে রেখেছে | আর্শির বাড়ির কেউ আসেনি এখনো |

অভীক যেতেই আর্শি তাকালো | অভিক বলল,”কী সোনা? তুমি স্কুলে কবে ভর্তি হলে?”

“আমি তো অনেকদিন আগে ভত্তি হয়ে গেছি, আমি তো আপাল নার্সালি” আধো আধো গলায় তিতলি ওরফে আর্শি উত্তর দিল |

অভীক দেখল তিতলির বুকে ঝোলানো আইকার্ডে লেখা – ‘Arshi Sen, class- upper nursery’ | মানে, শিঞ্জিনী ওকে মিথ্যে বলল | কিছুক্ষনের মধ্যেই শশীদি চলে আসেন আর্শিকে নিতে | আর্শি টাটা করে বাড়ি চলে যায় | অভিক এই সুযোগটা কাজে লাগায়… আর্শিকে follow করে শিঞ্জিনীর ফ্ল্যাটের ঠিকানাটা পেয়ে যায় অভীক |

***********************

বাড়ি ফিরে অভিক সেদিনের কথা নিয়ে ভাবে, ‘শিঞ্জিনী ওকে এসব মিথ্যা বলল কেন? কী লাভ হলো তাতে?…….. কিছুক্ষনের মধ্যেই অভীকের চোখ চকচক করে উঠলো | আচ্ছা, আর্শি upper nursery তে পড়ে, মানে বয়স 4 বছর হবেই, আর আর্শি নামটা তো ও আর শিঞ্জিনী মিলে ঠিক করেছিল | তাহলে কী আর্শি অভীকেরই সন্তান? ওই জন্যই সেদিন, একটা good news আছে ফোনে বলেছিলো? ‘

নাহ, আর কোনো শক্তি অভীককে আটকাতে পারবে না | অভীক পরদিন সকালেই পৌঁছালো শিঞ্জিনীর ফ্ল্যাটে |

শিঞ্জিনীর কাছে এটা স্বাভাবিক ভাবেই unexpected ছিল | অভীক ঢুকেই সটান সোফায় বসে পড়ল | শিঞ্জিনী খুব অস্বস্তিতে পড়ে গেল ,ঘটনার আকস্মিকতায় ও বাধাও দিতে পারল না অভীককে |

“কী ব্যাপার? তুমি এখানে কিভাবে এলে?”-শিঞ্জিনী কোনপ্রকারে প্রশ্নটা করলো |

“তোমার স্বামীর সাথে আলাপ করব ভাবলাম, ডাকো তাকে |”-অভিক |

শিঞ্জিনীর মধ্যে একটা ভয় কাজ করতে শুরু করে, সত্যিটা বেরিয়ে পড়বার ভয়, একটু তোতলামো করে-“ও – ও বাইরে গেছে, কাজে |”

“আচ্ছা, তা বেশ”, অভীক পুরো flat ঘুরে দেখতে লাগল তারপর বলল,”তোমার flat দেখে তো মনেই হচ্ছে না এখানে কোনো পুরুষ মানুষ থাকে | আর কত মিথ্যা বলবে?”

শিঞ্জিনী-“কী বলতে চাও টা কী তুমি, আর- আর আমি যা ইচ্ছে বলব, তাতে তোমার কী?”

                     অভীক-“তাতে আমার যায় আসে শিঞ্জিনী, কারণ আর্শি আমার মেয়ে |”

শিঞ্জিনীর কানে যেন বাজ পড়লো, অভিক জেনে গেল কিভাবে? এবার যদি অভিক আর্শিকে নিয়ে যেতে চায়? কী করবে ও? ও তো আর্শিকে নিয়েই বেঁচে আছে |’

                     অভীক বললো-“শিঞ্জিনী সেদিন আমার কোনো দোষ ছিল না | নেহা শহরে এসে আমাদের বিয়ের খবর শুনে আমার বাড়ি চলে এসেছিল | ও আমায় দুর্বল করার চেষ্টা করছিল শিঞ্জিনী | আমি মুহূর্তের জন্য দুর্বল হয়েও গেছিলাম স্বীকার করছি, কিন্তু তোমায় ঠকাইনি | আমি ওকে সরিয়ে দি, কিন্তু ও আমায় ধাক্কা দিয়ে খাটে ফেলে দেয়, আর ওই মুহূর্তেই তুমি এসে পড় | বিশ্বাস কর আমি সত্যি বলছি | আচ্ছা আমি যদি নেহাকেই ভালবাসি তাহলে তোমায় বিয়ে করতে যাব কেন? এটা একবারও ভাবলে না? আমি একটাও মিথ্যে বলছি না trust me | নেহাকে তো বিয়েও করিনি | তাহলে?”

“নেহাকে নয় তো অন্য কাউকে তো বিয়ে করেছো | এখন তাই এসব বলে কোন লাভ নেই | please, তুমি যাও |” শিঞ্জিনী মুখ ঘুরিয়ে নেয় |

“শিঞ্জিনী তুমি যদি আমায় একবার বলার সুযোগ দিতে, একবার আমার কথা শুনতে তাহলে আমাদের এত কষ্ট পেতে হতো না | আর কোন বিয়ে করোনি তুমি,ar আমিও করিনি |”

শিঞ্জিনী অবাক ছলছল চোখে তাকিয়ে থাকলো বেশ কিছুক্ষন, ভাবনা চিন্তা গুলো সব কেমন জট পাকিয়ে যাচ্ছে, কোনটা ঠিক কোনটা ভুল বোঝার ক্ষমতা যেন আর নেই ওর, আজ যেন বড্ড ক্লান্ত ও সবার সাথে লড়তে লড়তে,এবার একটা মাথা রাখার মতো কাঁধ বড্ড দরকার, আর আজ ওর সামনে দাঁড়িয়ে ওরই ভালোবাসা, তাহলে কি এতগুলো দিন দূরে থেকে ভুল বুঝে নিজেদের জীবনের সুন্দর সময় গুলোকে এইভাবে নষ্ট করে ফেললো ও? ভাবতে ভাবতে অবশেষে কান্নায় ভেঙে পড়লো শিঞ্জিনী,আর পারছে না ও |

অভিক অভীক শিঞ্জিনীর হাত টা ধরে বলল -“আমরা আবার নতুন করে শুরু করি? আর্শিকে নিয়ে, আর কোন জেদ কোরো না, please |”

শিঞ্জিনী আর পারলো না, পারলো না আর নিজেকে আটকাতে, আর কাঠিন্যের আড়ালে ভালো থাকার নাটকটা চালাতে পারলো না ও অভীকের সামনে | অভীককে জড়িয়ে ধরলো অবশেষে, বহুদিন পর, আবার আগের মতন, চোখের জল তখন বাঁধ ভেঙেছে দু তরফেই, আর্শি হাততালি দিয়ে উঠল | অভীক নিজের ছোট্ট আর্শিকে কোলে তুলে নিল |

তুলিকা রায়ের কলমে দুটি ভিন্ন স্বাদের সেরা উপন্যাস একসাথে মাত্র ৯৯/- টাকায় -

Share with

এরকম আরো কিছু গল্প

তোমায় আমায় মিলে

।।১।। “উফফ! পা-টায় যা অসহ্য যন্ত্রনা করছে। সেই কখন থেকে দাঁড়িয়ে। আর পারা যায়?” হাতের , কানের গয়নাগুলো খুলতে খুলতে বলছিল কুহেলী। রাজীব ততক্ষণে মোবাইল

Read More »

নিভৃত যতনে

।। ১।।   কোর্টের বাইরে তখন খাঁ খাঁ করছে রোদ, ঘড়ির দিকে তাকাল একবার রিয়াঙ্কা, কোথা দিয়ে এতটা সময় চলে গেল বুঝতেই পারেনি। একবার বাবার দিকে

Read More »

সন্ধ্যে নামার আগে

।।১।। “প্লিজ তোমার ভাঙা রেকর্ডটা একটু বন্ধ কর তো, সবসময় ভালো লাগে না। একেই অফিসে এত কাজের প্রেশার, বাড়ীতে একটু শান্তিতে বসব, তাও দেবে না।”

Read More »

যদি

।।১।। “আর দেরী করলে কিন্তু, সত্যিই পৌঁছতে পারবে না, অলরেডি সাড়ে চারটে বেজে গেছে” মা-এর উদ্দেশ্যে চেঁচাল মৌমিতা, অয়নের দিকে একবার আড়চোখে তাকাল। অয়নও একটা

Read More »

তুমি রবে নীরবে

।।১।। “বাবু, তোকে আর কতবার বলতে হবে, রোজ একবার করে অন্তত প্র্যাকটিসটা করবি question bank টা। আজও তো করলি না।” পেটির মাছের পিসটা একমাত্র ছেলের

Read More »

একে একে এক

।।১।। চোখে সোনালী ফ্রেমের চশমার আড়ালে ঘন কালো কাজলে মোড়া বড় চোখদুটো সামনের দেবদারু গাছটার দিকে তাকিয়ে অন্যমনস্কভাবে কি যেন একটা খুঁজছিল, হাতের পেপার ওয়েটটা

Read More »

Share with